রবিবার, ২৯ Jun ২০২৫, ০৩:০১ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক:
টেকনাফে চেকপোস্টে বিজিবির বিরুদ্ধে এনজিও তরুণীকে ধর্ষণের অপপ্রচারের অভিযোগে আদালতে ১শ’কোটি টাকার মানহানি মামলা দায়ের করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। টেকনাফ ২নং বিজিবির আওতাধীন কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের দমদমিয়া তল্লাশি ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত জেসিও নায়েব সুবেদার মোহাম্মদ আলী মোল্লা মামলাটির বাদি।
মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) বিকালে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে মানহানি মামলাটি দায়ের করা হয়। এতে আসামী করা হয়েছে এনজিও ব্লাষ্টের নারী কর্মী ফারজানা আকতারকে। সে গত ৮ অক্টোবর টেকনাফের দমদমিয়া বিজিবি’র চেকপোষ্টে তল্লাশীর সময় ধর্ষণের অভিযোগ তুলছিল।
কক্সবাজার কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক চন্দন কুমার চক্রবর্তী সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘মঙ্গলবার বিকালে বিজিবি’র পক্ষে থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাদির আবেদনটি আমলে নিয়ে আদালত আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে একটি বাহিনী। এমন একটি বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ওই এনজিও নারী কর্মী অহেতুক উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে গণধর্ষণের মতো মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছেন। যাতে করে বিজিবি’র মতো একটি বাহিনীর ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে আঘাত হেনেছে। এজন্যই বিজিবি আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে।
আবেদনে আরও বলা হয়েছে, ওইদিন সকালে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নে বøাষ্ট এনজিওতে কর্মরত কর্মী ফারজানা আকতার সিএনজি নিয়ে বিজিবি’র দমদমিয়া চেকপোস্ট পার কক্সবাজার সদরে যাচ্ছিল। এসময় চেকপোস্টে দায়িত্বরত বিওপি’র সদসরা যথারীতি সিএনজিটি থামানো হয়। সিএনজি’র ৫ জন যাত্রীর মধ্যে অপর ৪ জন যথারীতি নেমে নিয়মমাফিক তল্লাশীর কাজ সারেন। কিন্তু ওই নারী নিজেকে বøাষ্ট এনজিও’র কর্মী পরিচয় দিয়ে দাম্ভিকতা দেখিয়ে তল্লাশি এড়ানোর চেষ্টা করতে থাকেন। এতে বিজিবি সদস্যদের কাছে সন্দেহ হলে বিজিবি’র নারী সদস্যরা তাকে সিএনজি থেকে নামিয়ে তল্লাশি করেন। এতে নারী কর্মী ফারজানা আকতার বিজিবি’র ওপর ক্ষুব্ধ হন। তিনি ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে ফাঁড়ির পুরুষ সদস্যরা তাকে গণধর্ষণ করেছে মর্মে অভিযোগ তুলেন। অথচ তল্লাশি ফাঁড়িতে ওই দিনের সিসি ক্যামেরার যাবতীয় ফুটেজ পরীক্ষা করেও এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা মিলেনি। এমনকি তিনি ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে টেকনাফ থানায় বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করতে যান। কিন্তু পুলিশ মামলায় মেডিক্যাল সনদ দরকার জানালে ওই নারী কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শাহীন আবদুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত একটি মেডিক্যাল বোর্ড তাকে পরীক্ষা করে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে সনদ প্রদান করেন।
এ বিষয়ে মামলার আসামী ও নারী এনজিও কর্মী ফারজানা আকতারের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। একইভাবে টেকনাফ ২নং বিজিবির পক্ষ থেকেও কোন ধরণের বক্তব্য পাওয়া যায়ন।
ভয়েস/আআ